Bengalisch / Bangla


জুর্গেন্‌ জানোক্ফ্‌স্কি

 

 

আনা হুড

পৃথিবীর ১৯টি ভাষায় বাচ্চাদের  জন্য একটি  পরিস্থিতির বর্ণনা

 

 

অনুবাদ: ভাস্বতী চ্যাটার্জি

 

 

 

এক

 

“অন্যায়”,বলে উঠল আনা, এটা হী, খুবই হী|"

টি.ভি. তে এক আশ্রয়প্রার্থী হেঁটে সমুদ্র পার করছিল| সে একটা বাচ্চাকে কোলে করে আনছিল, একটি মৃত বাচ্চা| সাবধানে, সে বাচ্চাটিকে তীরে এনে রাখল, হাঁটু মুড়ে সে নিচু হয়ে বসে আকাশের দিকে চেয়ে দেখে| পর্যটকরা স্নানের পোষাকে, বাচ্চারাও কাছে এল, চেয়ে দেখল| না, এটা সিনেমা নয়, খবর সব সত্যি, এই সবে মাত্র ঘটল|

আনা চোখ দুটি হাত দিয়ে ঢাকল, মাথা নাড়ল তাও সেই ছবিগুলি থাকলই| আরো সমুদ্র আরো অন্য আশ্রয়প্রার্থীরা ভাসছিল| আর দিগন্তে ডুবে গেল আরও একটি নৌকা|

স্বাভাবিকভাবেই এটি প্রথমবার ঘটেনি যে সে এরম এক দৃশ্য দেখে, তবে আজ তার কাছে সবটাই বেশী প্রকারে বড় মনে হচ্ছে|

খবরের মুখপাত্র বলল যে লোকেরা দান করতে পারেন| যদি তাঁরা সাহায্য করতে চান, যে কোন সময় করতে পারেন|

আনা তার ঘরের দিকে হেঁটে গেল আর তার পিগিব্যাংকটিকে নিল| গতকালকেই তার দাদু-দিদিমা তাকে ছুটি কাটাবার জন্য তাকে অনেক টাকা পয়সা দিয়েছিলেন| "শুভ যাত্রা! খুব আনন্দ কর|" কিন্তু সেটা তার তার কল্পনার বাইরে যে সে মা-বাবার সাথে গাছের তলায় শুয়ে থাকবে আর এরম একটা ঘটনা ঘটে যাবে, যা সে টি.ভি. তে দেখছিল…না! দয়া করে না!

সে তার পিগিব্যাংকটিকে মাথার উপর তুলল আর -ঠাস! সেটি মাটিতে পরে চুড়-চুড় হয়ে গেল| সব পয়সাগুলি এদিক ওদিক গড়াতে থাকল|

"এখানে কি হয়েছে?" মা দৌড়াতে-দৌড়াতে রান্নাঘর থেকে এল|

"তুমি এটা কি করেছ?"

"আমি দান করতে চাই|" আনা বলল আর জানালা

বাইরেটি দেখাল| "তুমি আমাকে সাহায্য

করবে?"

"হ্যাঁ, কিন্তু…"

"হী",বলল আনা, "এক দল সূর্যের উষ্ণতা উপভোগ করছে (ছুটিতে), আর অন্যরা মারা যাচ্ছে-এটার একটা বিরতি দরকার, একবারের মত শেষ হওয়া দরকার!" 

 


দুই

 

রবিন সুধু হাতেই বাবলগামের যন্ত্রটিতে একটি ঘা দিল|

"সার" বলে পালিয়ে গেল, "আরো কত আমাকে এটার মধ্যে ঢালতে হবে? কিছুই আসছে না বাইরে?"

আনা তাকে পর্যবেক্ষ করছিল, কেমন রবিন রাগের মাথায় তার প্যান্টের পকেটে পয়সা খুঁজছিল| কিন্তু এমন সময় যেই রবিন আরেকটা পয়সা যন্ত্রটিতে ফেলতে যাচ্ছিল, আনা তাকে ডাকল, বলল: "দাঁড়া!"

আনা তার ক্লাসের অন্য সব বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করল, যে তারা বিশ্বের অবিচারের বিরুদ্ধে কিছু করতে চায় কিনা, যেমন মর্মপীড়া, দুর্বিপাক, দুঃখ| কিন্তু সবার কাছেই ছিল কিছু একটা অজুহাত: কেউ বলল যে সে তার পয়সার ব্যাগ বাড়িতে ফেলে এসেছে আর কেউ বলল তার সময় নেই, কেউ বলল তার অনেক পড়া তৈরী করা বাকি আছে, আর কেউ বলল যে তারা বাবা-মাকে আগে জিজ্ঞেস করবে, কেউ-কেউ বা দেখাল যে তাদের পরের দিন অনেক কাজ আছে হয়ত|

রবিনের কৌতূহল ভরা নজর ছিল আনার ব্যাগে লুকানো একটি বাবলগামের উপর, যদিও সেগুলিতে জগাখিচুড়ি পাকিয়ে গেছিল| অনেক ধৈর্য্য ধরে সে আনার কথাগুলি শুনল, কেমন টি.ভি. তে অসহায় আর কঠিণ পরিস্থিতির ছবি ইত্যাদি দেখাচ্ছিল  আর মোটেই এই অবস্থা| আর সত্যি-সত্যি রবিন শেষে তার একটা পয়সা আনার পিগিব্যাঙ্কে দিল|


 

তিন

 

আনা সেই টাকাও দান করেছিল যা তাকে তার বাবা অঙ্কের এক কঠিণ প্রশ্নের উত্তর সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য পুরষ্কার হিসাবে দিয়েছিল| সে তার মামা, মামী, কাসেনদের, প্রতিবেশীদেরকেও, এমন কি তার টিচার আর অপরিচিত মানুষদের রাস্তায় দান করতে অনুরোধ  করল|

তথাপি, সেই ছবি, সেই মর্মান্তিক খবরের দৃশ্য তার মাথায় একটা ছাপ ফেলে গেছে| হ্যাঁ, দিনে-দিনে এই পরিস্থিতি বেড়েই চলেছিল, কম হচ্ছিলনা, আর এই ছবি , এই দৃশ্য  দিনে-দিনে আরো ভয়াবহ হয়ে উঠল: অনেক-অনেক নৌকা ডুবে যাচ্ছিল, বহু মানুষ মারা যাচ্ছিল আর বাড়ছিল আশ্রয়প্রার্থীদের ভীড়|


 

চার

 

রবিন আনাকে জিজ্ঞেস করল যে সে জানে কিনা যে রবিনের নাম এক বিখ্যাত, এক বিশ্ববিখ্যাত নাম বিশিষ্ট ব্যক্তি:

সবুজ জাম পরা, তীর-ধনুক, যা সে নির্ভুলভাবে ঠিক লক্ষ্যতে ছোঁড়ে, এক বীর, এক সাহসী বুদ্ধিমান, যে বড়লোকদের ধন হাতিয়ে নিত আর সেগুলি গরীবদের দিত...

"ঠিক", বলে সুনিশ্চিত করল রবিন|


 

পাঁচ

আনা গভীর চিন্তা করল|

"তুই বলতে চাস", শেষে সে জিজ্ঞেস করল, "আজ যদি বড়লোকেরা গরীবদের টাকা-পয়সা দিত, এতটাই দিত যে যা থেকে তারা অন্তত জল-খাবার পেতে পারত, ইস্কুলে যেতে পারত, তারপর একটা চাকরি খুঁজে পেতে পারত, সবাই শান্তিতে থাকতে পারত, তাহলে কাউকেও পালাতে হত না?"

"আমি জানিনা " বলল রবিন|

"যদি গরীবদের তাদের ঘর-বাড়ী-দেশ নাই ছাড়তে হত, নাই যদি বড়লোকদের দেশে আসতে হত, তাহলে কি তার এই ভয়ংকর সমুদ্র, মরভূমী, পাহাড়, কাঁটাতার দেওয়া সীমান্ত পার করত?"

"আমি জানিনা", বলল রবিন|

"আমি তীর-ধনুক চালান কোথায় শিখতে পারি? আনা জিজ্ঞেস করল|

"আমি জানিনা", বলল রবিন|


 

ছয়

রবিন দিনের পর দিন লক্ষ্য করল যে আনা কেমন তার চেহারা পরিবর্তন করছিল: প্রথমে সে দেখল যে আনার চুলে একটা সবুজ বো, তারপর হাতের নখে সবুজ নেল-পালিশ, শেষে একটা সবুজ সোয়েটার তারপরে একটা সবুজ স্কার্ট আর সবুজ জুতো আর সব শেষে সে সবুজ ঠোঁট, চোখের পাতায় সবুজ, সবুজ ঘড়ি,সবুজ খুঁঙ্গি, সবুজ চুড়ি, মালা আর আংটি|

হ্যাঁ, সে আরও সবুজে অপসারিত হতে লাগল, তার ব্যবহার খুব গোপনিয়াপূর্ণরুপে আর তাকে দেখে  মনে হত যে সে খুব গভীর চিন্তায় আছে, হাসত না, কোথাও যেত না, রবিনের সাথেও খুব কম কথা বলত|

হয়ত তার নজরেও পরত না যে রবিন হঠাৎ একটা বেসকাপ পরে ইস্কুলে আসে, যদি না টিচার বার-বার তকে কে অন্তত ক্লাসের সময় খুলে রাখবার প্রস্তাব না দিয়ে থাকত|

"তোকে সবুজ মানায়" বলল আনা|

"তোকেও", বলল রবিন|

দুজনেই হাসে|

"রবিন হুড সবসময় হাসি-খুশী থাকত" বলল রবিন, "সবসময় তার সাথে কথা বলা যেত, তার মন সব সময় আনন্দে ভরা থাকত|"

"এটা তুই কোথা থেকে জানলি?

"আরে আমি একটু এই ইন্টারনেটে, এতে-তাতে পড়লাম|"

"ভাল" বলল আনা, "আর তারপর?"

"রবিন হুড একা কিছুই করতে পারত না, কিছুই না. তার অনুগামীদের, তার দল ছাড়া কিছুই হত না. সে একা কখনই এত সোনা পেতনা, কখনই একা সঠিক ন্যায়ের জন্য লড়তে পারত না, কখনও না, না!"

"হুঁ, আনা ভাবতে শুরু করে, "তুই কি বলার চেষ্টা করছিস...?"

"যৌক্তিক", বলল রবিন|

"তাহলে পরে", বলে আনা আর এই বলে সে রবিনের সামনে একটি সবুজ আংটি তুলে ধরল, "স্বাগতম্‌ আনা-হুডের দলে!"


 

সাত

আনা যখন নিজে নিজে ইন্টারনেট ঘাঁটল, তখন সে খুঁজে পেল যে রবিন হুড আর তার অনুগামীদের আইনবিরোধী বলা হত| আর আইনবিরোধী নিয়ম ছিল বড়লোকদের ধন নেওয়া আর সেগুলি গরীবদের দেওয়া|

তারপর সে খুঁজে পায় যে তার বড়লোকদের সব সোনা, টাকা-পয়সা বা গহনা নিত না, শুধু অর্ধেকটি আর সেটি নিজেদের দরকারের জন্য নিত|

আর শেষে সে দেখল যে একশ বছর আগে ইংল্যান্ডে রবিন-হুড-খেলা নামে একটি খেলা খেলা হত, সেখানে গান আর নাচ হত, আবৃত্তি হত, নাটক হত, ভেলকি খেলা, ভারসাম্য সামলানর খেলা আর জাদু দেখান হত আর বড়লোকরা নিজের থেকেই পয়সা দিত গরীবদের জন্য, অঢেল দিত|আজকাল পয়লা মের-দিনে এই রবিন-হুড-খেলা খেলা হয়|


 

আট

"দারুণ ব্যাপার", বলে উঠল রবিন, "আজকেই পয়লা মে, আয়!"

"কিন্তু তুই কোথায় যেতে চাস?"

"সেখানে, যেখানে সব বড়লোকদের যাওয়া দরকার, সেখানে, যেখানে টাকা আছে, ব্যান্ক!"

আর শুধু এই বলেই সে আনার হাত ধরে শহরের মধ্যে দিয়ে দৌড়ে গেল|

বান্কের সামনে যদিও একধারে দাঁড়িয়েছিলেন বয়স্ক ভদ্রলোকেরা আর আরেকধারে ভদ্রমহিলারা হাতে লাল রঙ্গের বিশাল শিরনাম আর কান কালা করে দেওয়ার মত ভিসেল-বাঁশি জোড়ে বাজছিল| আরেকধারে ছিলেন কিছু বয়স কম পুরুষ আর মহিলারা, তাদের হাতে ছিল কাল ধ্বজ্‌ আর বিশাল এক কাল শিরনাম নিয়ে চেষ্টা করছিল আরেকটি দলটিকে আক্রমণ করার| তার মাঝে পুলিশ| আর যখন সবাই একটু নিঃশ্বাস নিচ্ছিল, তখনই এক স্টেজের উপর এক বয়স্ক বক্তা টাকার জোড়ের কথা বলতে শুরু করলেন, সারা বিশ্বের শ্রমিকরা কিরকম ধরনের শ্রম করতে বাধ্য  হযেছিল| আর একটি কাগজের টুকরো দেখে তোতলে-তোতলে আরো অনেক কথা পড়ছিলেন, আনা আর রবিন তার একটাও কথা বুঝলনা| তাদের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেয় না| এদের দুজনের নাচ বা গান, আবৃত্তি, নাটক, ভেলকি খেলা, ভারসাম্য সামলানোর  খেলা বা জাদু করে দেখাবার আগেই এক দল এসে আরেকটি দলকে ধাওয়া করল:

"এখানে কোন খেলা, অনুষ্ঠান হবে না!"

"এখানে পয়লা-মে-বিশ্ব শ্রমিক দিবস!"

"বুঝেছিস্‌?"


 

নয়

দৃষ্টি আকৃষ্ট করছি| বাচ্চারা! আনা ইন্টারনেটে লিখল: অন্যায়ের বিরুধে কে? কে সমর্থন করে আইনবিরোধীদের আইনকে? আমরা আনা-হুড নামের একটি দল গড়েছি| তোমরা আমাদের সঙ্গ দেবে কি? তাহলে আমাদের বল!


 

দশ

বেশী সময় লাগলনা আর আনা বিশ্বজুড়ে ইন্টরনেটে-চিঠি পেল|

প্রথমে লেখে অটো: আমি তোর সাথে!

তারপরে আখমেদ, আর্মেন, আমো, সোভানী আর আকিরা|

মারিয়া জানতে চাইল যে সে আনার উদ্দেশ্য অন্য একটা ভাষায় অনুবাদ করতে পারে কিনা.

নিশ্চই!

স্বেতলানা জানতে চাইল, যে সে আনার উদ্দেশ্য অন্য বাচ্চাদের কেও পাঠাতে পারে কিনা.

নিশ্চই!

ইন্দিরা জানতে চাইল, যে সে এই উদ্দেশ্য অন্য একটা ভাষায় অনুবাদ করে আরও অন্যদের পাঠাতে পারে কিনা|

নিশ্চই!নিশ্চই!নিশ্চই!

বরফের তৈরী বলের মত একে অন্যকে খবরটা গড়িয়ে দিল: এখন গিসো আর স্লাট্‌কো, হাইলে, বাগেশ্রী, মানেন আর থীজ্‌স, আগনেটা, এউলে আর সারা, জোসে, জন্‌, গেয়োর্গী আর জিওভানী, লিং, রুই, জিংগীস, মালাইকা, ভাইনো, জাবি, য়ালা, রাফিন্‌হিলদুর, বিনতাং, ওডেসে, ভালুয়ু, নায়্রা, মোভান, এর্নেস্টো, আর জান্‌কো, জানেট্‌, জাস্‌মিন, কারাম্বা, পাট্রিক, রোটো, নানুক, নুনুয়, স্বেন, জাখিরি, নারুমোল, হোয়া, গাবীজা, রাডু, টেনজিন আর সু-জুঙ্গ সাথে যুক্ত হতে চাইল|

স্বাগত্‌.


 

এগার

"তুই কি পড়েছিস?", রবিন প্রশ্ন করল আনাকে, "আমাদের দলের নতুন সদস্যরা কি-কি চিন্তা তুলে ধরেছে? আমাদের কি করা উচিত?"

"নিশ্চই", বলল আনা, "দেখা যাক আমরা কি করতে পারি?"

বাচ্চাদের মত ছিল যে সব বাচ্চার, যারা ব্রেকফাস্ট না করেই ইস্কুলে যায়, তাদেরকে বড়লোকদের দিয়ে আমন্ত্রিত করা আর সেই সুযোগেই অন্ততঃ তিনটি পদ রান্না খাওয়ানো যেমন একটা সুপ একদম প্রথমে, একটা লাঞ্চ আর শেষে মিস্টিমুখ করানো|

এখুনি!

সব বাচ্চারা নাহলে ধর্মঘটে বসবে আর যতক্ষ পর্যন্ত না বিশ্বজুড়ে বড়লোকদের কাছ থেকে কর না নেওয়া হচ্ছে, এরম না হলে, বিশ্বজুড়ে সব বাচ্চারা হোমওয়ার্ক করা, ক্লাসে যাওয়া, ইস্কুলে গিয়ে পড়া করা বন্ধ করে দেবে, যদি না যাদের পয়সা আছে তারা তাদের বেতনের অর্ধেক অংশ যাদের পয়সা নেই তাদের দিয়ে দিচ্ছেনা. হঠাৎ!

না হলে, সব মানুষ-রোগা-মোটা, কাল-ফর্সা, পুরুষ-মহিলা, বড়লোক-গরীবলোক, হলুদ, ব্রাউন, প্রতিটি দেশের, বিশ্বজুড়ে মানুষ যেন একই  বেতন পায়, তাহলেই বিশ্বে আর কোন মানুষ অনাহারে, তৃষ্ণাতে থাকবে না, সবাই যেন থাকবার জন্য একটা বাড়ি পায়, সবাই যেন ইস্কুল যেতে পারে, সবাই যেন একটা চাকরি খুঁজে পায় এবং সেই চাকুরির বেতনে যেন নিজের ইচ্ছামত কিছু একটা কিনতে পারে, যেখানে সে চাকুরি পাচ্ছে সেখানেই যেন নিজের বাড়িতে থাকতেও পারে| সব বড়লোকদের পয়সা একসাথে করলেই পৃথিবীর সব মানুষের কষ্টের সমাধান হয়ে যায়, ঠিক আছে?


 

বার

"দয়া করে অনুকূল থাক!"

রবিন আনাকে পরিচালনা করছিল, আনা পূর্ণরুপে সবুজ সাজে সেই বিশাল ব্যাঙ্কের সামনে দাঁড়িয়ে এদিক-ওদিক হাঁটছিল.

"আর এক পা এগিয়ে সামনে আয়. হ্যাঁ, আর একটু মাঝামাঝি, এই ভাল, খুব ভাল."

আর তারপর রবিন আনাকে তার সবুজ বেস টুপিটি পরিয়ে দিল আর ক্লাক! আর ক্লাক! আর ক্লাক করে ছবি তুলতে থাকল, বার-বার, আবারও ছবি তুলতে থাকে সে.

সবচেয়ে সুন্দর ছবিটিকে তখনই ইন্টারনেটে আপলোড করল: শুভেচ্ছাসহ আনা হুড!

বাড়িতে এসে আনা তাড়াতাড়ি লিখল: শীঘ্রই আসছে পয়লা জুন-শিশুদিবস. এখন থেকে আমাদের রবিন-হুড-দিবস নামও তাই হল. আমরা সবুজ সাজে থাকব-কিছু একটা সবুজ রঙ্গের সবার কাছে ঠিকই থাকবে: একটা সবুজ মোজা বা একটা সবুজ হাতে পরবার ব্যান্ড বা একটা সবুজ পেন্সিল বা একটা সবুজ তালপাতা (পামলিফ) বা একটা ঘাস-আমরা রবিন-হুড-দিবসে ওখানে সবুজ সাজে যাব, যেখানে পয়সা আছে: ব্যান্কে বা বড়লোকদের বাড়িতে, ঠিক যেমন আমরা হেলোয়িনে প্রতিটি বাড়িতে যেতে সাহস করি! আমরা মিষ্টি বা টক কিছুই চাইবনা, উপহারও চাইবনা, এসব ছেড়ে দিয়ে ন্যায় চাইব! হ্যাঁ, সবার জন্য! যারা আমাদের নিয়ে ঠাট্টা করবে বা আমাদের পথে যে বাধা দেবে তাদের একটা ছবি তুলে ইন্টারনেটে তুলে দেব-এটাই আমাদের উদ্দেশ্য, এর পরের রবিন-হুড-দিবসে আরও বেশী সবুজ সাজের বাচ্চারা ন্যায়ের জন্য লড়বে, তার পরেরটায় আর তার পরেরটাতে আরও-আরও বেশী ন্যায় পাক বাচ্চারা, ঠিক বরফের গোলা তৈরী করার মত-প্রতি বারে বাড়বে আকারটা আর শেষে তা দিয়ে হবে প্রকান্ড এক বরফের গোলা.

রবিন জিজ্ঞেস করল আনাকে, যে সেও কি কিছু লিখতে পারে,

"অবশ্যই!"

সে লিখল: ভুলবিনা আমরা বড় হব-আর তখন আমরাই এই বিশ্বে রাজত্ব করব!

খুব শীঘ্রই বিশ্বের ভিন্ন দেশের বাচ্চারা উত্তর করেছিল তাতে: হ্যাঁ,হ্যাঁ,হ্যাঁ-আমরা সাথে আছি.

কেউ এটা জানতে চাইল, কেউ অন্য কিছু: যেমন কিনা সবুজ চশমা পরার অনুমতি অছে কিনা, বা শিরোনাম আঁকা যাবে কিনা অথবা ভিডিও তোলার অনুমতি আছে কিনা.

হ্যাঁ,হ্যাঁ,হ্যাঁ!

আর তারপর ১লা জুনে, রবিন-হুড-দিবসে আনা লিখেছিল এবার শুধুমাত্র: শুরু কর!  

 

 

 

Übersetzung: Bhaswati Chatterjee / অনুবাদ: ভাস্বতী চ্যাটার্জি